বিনোদন ডেস্ক
টালিউডের প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতার নাম ভাঙিয়ে টাকা চাওয়া হচ্ছে, তারপর অভিনেত্রীদেরকে শহরের হোটেলে ডেকে নেওয়া হচ্ছে! সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যমে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিলেন টালিউড অভিনেত্রী মৌমিতা পণ্ডিত। এ ঘটনায় সরাসরি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন অভিনেত্রী।
সম্প্রতি শ্রীকান্তের নামের একটি ফেসবুক প্রোফাইল থেকে মৌমিতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। প্রথমে সেটিকে আসল প্রোফাইল ভেবেই কথা বলেন অভিনেত্রী। ইন্ডাস্ট্রির বহু পরিচিত শিল্পীকে ওই প্রোফাইলের মিউচিউয়াল ফ্রেন্ডের তালিকায় দেখা যায়, তাতে প্রোফাইলটি যে ভুয়া, তা তিনি বুঝতে পারেননি।
অভিনেত্রীর যুক্তি, ‘ইন্ডাস্ট্রিতে সকলের মোবাইল নম্বর থাকে না। অনেকেই তাই সমাজমাধ্যমে যোগাযোগ করতে চান। তাই প্রথমে সন্দেহ করিনি।’
মৌমিতার দাবি, ওই প্রোফাইল থেকে সরাসরি তাকে কাজের প্রস্তাব দেওয়া হয়। মেসেঞ্জারে কল করে নিজেকে প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতা দাবি করে হিন্দিতে এক জন ব্যক্তি কথাও বলে। সেই মতো ৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় এক জন কাস্টিং ডিরেক্টরের সঙ্গে তাকে দেখা করতে বলা হয়।
এরপর সিড নামের একটি ছেলের সঙ্গে দেখা করেন মৌমিতা।
মৌমিতা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি কসবার একটি ক্যাফেতে তার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু চিত্রনাট্যের ‘গোপনীয়তা’র স্বার্থে তিনি অভিনেত্রীর গাড়িতেই বসেন। সেই সময় গাড়িতে মৌমিতার গাড়ির চালকও উপস্থিত ছিলেন। মৌমিতার কথায়, ‘রাস্তার পাশে গাড়িতে বসেই তিনি আমাকে চিত্রনাট্য শোনান। ছেলেটি যেভাবে কথা বলে, তাতেই বুঝতে পারি ইন্ডাস্ট্রির কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে সে ওয়াকিবহাল। অদিতি রায়ের পরিচালনায় আবীরদার (আবীর চ্যাটার্জির) সঙ্গে একটি ছবির জন্য আমাকে অডিশন দিতে বলা হয়।’
প্রযোজনা সংস্থার নামাঙ্কিত চুক্তিপত্রেও মৌমিতাকে স্বাক্ষর করানো হয়। নেওয়া হয় তার সরকারি পরিচয়পত্রের প্রতিলিপিও।
এই পর্যন্ত ঠিক ছিল। কিন্তু, তার পর অডিশনের জন্য নিকটবর্তী একটি হোটেলে মৌমিতাকে ডেকে নেওয়া যাওয়া হয়। মৌমিতার দাবি, ততক্ষণে তিনি বুঝে গেছেন- কোনো ঘাপলা আছে। তাই হোটেল থেকে বেরিয়ে আসেন এবং বলেন, অডিশনের ভিডিও রেকর্ড করে পরে কাস্টিং ডিরেক্টরকে পাঠিয়ে দেবেন। মৌমিতা বলেন, ‘তারপরেও ইচ্ছে করেই কথোপকথন এগিয়ে নিয়ে যাই যাতে আমার কাছে জলঘোলা এই বিষয় আরও পরিষ্কার হয়।’
মৌমিতার টালিউডের ‘আর্টিস্ট ফোরাম’-এর সদস্যপদ নেই। ওই ব্যক্তি অভিনেত্রীর কাছে দাবি করেন, তিনি বিশেষ সূত্রে কার্ড করিয়ে দিতে পারবেন। কিন্তু তার জন্য টাকা দিতে হবে। কারণ সদস্যপদ না থাকলে তিনি নাকি ওই ছবিতে সুযোগ পাবেন না। তাই বুধবার সকালে শ্রীকান্তের সেই ভুয়া প্রোফাইল থেকে মৌমিতার কাছ থেকে কার্ডের জন্য টাকা চাওয়া হয়, ইউপিআই আইডির মাধ্যমে ৭ হাজার ৫০০ টাকা পাঠাতে বলা হয়।
মৌমিতা বলেন, ‘টাকা দিতে অস্বীকার করায় তখন ওই প্রোফাইল থেকে আবার কল আসে। তখন আর হিন্দি নয়, সরাসরি বাংলায় আমাকে হুমকি দেওয়া হয় যে টাকা না দিলে ক্যারিয়ারের ক্ষতি করে দেওয়া হবে!’
মৌমিতা জানালেন, পুরো ঘটনাটি জানিয়ে বুধবার তিনি সোনারপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। একই সঙ্গে কলকাতা পুলিশের সাইবার অপরাধ দমন শাখাতেও বিষয়টি জানিয়েছেন। অভিনেত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ইতোমধ্যেই তদন্তে নেমেছে।