বিনোদন বাজার রিপোর্ট
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আজ ভারত-যুক্তরাষ্ট্র মুখোমুখি হবে। ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে কোনো আলোচনাই ছিল না। বেস বল, বাস্কেটল—এসব নিয়েই ছিল যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগেই বাংলাদেশকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারিয়ে আলোচনায় তুঙ্গে উঠে। আর বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার পর পাকিস্তানকে হারিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ভয়ের একটি দলের পরিণত।
যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেট ছড়িয়ে দেওয়ার বার্তা নিয়ে শুরু হয়েছিল এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ- তাতে এখন কিছুটা হলেও সফল বলা যায় আইসিসিকে। নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখা যাচ্ছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের আগ্রহ দৃশ্যমান হয়েছে। প্রথম দুই ম্যাচ জিতে বেশ সুবিধাজনক অবস্থায়ও আছে যুক্তরাষ্ট্র। এবার প্রতিপক্ষ ভারত। দুই দলের জন্যই সুযোগ থাকছে এই ম্যাচে বিশ্বকাপের সুপার এইট নিশ্চিত করে নেওয়ার।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে কানাডার বিপক্ষে ৮ উইকেটের বড় জয়। তাও ১৯৩ রান তাড়া করে। দ্বিতীয় ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রের জয় আরও চমকপ্রদ। ২০০৯ আসরের চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তানকে সুপার ওভারে এনে ৫ রানে জয়। এককথায় দুই ম্যাচের দুই জয়ে ঘরের মাঠে উড়ছেন স্বাগতিকরা। এবার তৃতীয় ম্যাচে মার্কিনিদের প্রতিপক্ষ ভারত। এই ম্যাচের আগে রোহিত শর্মাদের একরকম হুমকিই দিয়ে রাখলেন যুক্তরাষ্ট্রের সহ-অধিনায়ক অ্যারন জোন্স। তার মতে, ভারত শক্তিশালী দল বলে তারা ভয় পাচ্ছে না মোটেও।
একসময় যিনি অনূর্ধ্ব-১৯ ভারতীয় দলের জার্সি গায়ে খেলেছেন বিশ্বকাপ। তার পর জীবনের গতিপথ বদলে গিয়েছে অন্যদিকে। ফের ক্রিকেটের টানেই চলে এসেছেন মাঠে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচে নায়ক হয়ে উঠেছেন সেই সৌরভ নেত্রাভালকার। সুপার ওভারে পাকিস্তানকে মাত্র ১৩ রানে আটকে দিয়ে রাতারাতি সুপারস্টার হয়ে গিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই তারকা বোলার। এবার ভারতকে দেখে নেওয়ার পালা। শুধু সৌরভ নয়, যুক্তরাষ্ট্র দলে আরও একাধিক ভারতীয় বংশোদ্ভূত ক্রিকেটার রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অধিনায়ক মোনাঙ্ক প্যাটেলও জন্ম নিয়েছেন ভারতে।
সমান দুই ম্যাচ খেলে ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের জয় দুটি। আজ রাতের ম্যাচে লড়াই হবে ‘এ’ গ্রুপের অপরাজিত এই দুই দলের। ভারত ম্যাচের আগে দলের প্রতিনিধি হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে আসেন জোন্স। ভারতের বিপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের এই ম্যাচ হবে আন্তর্জাতিক আসরে প্রথম কোনো লড়াই। ভারতের মতো, একঝাঁক তারকা সমৃদ্ধ দলের বিপক্ষে খেলার সুযোগ খুব কমই আসে সহযোগী দেশগুলোর। সুযোগ কাজে লাগাতে যেখানে সামর্থ্যের সবটুকে নিংড়ে দিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
জোন্স বলেন, ‘আমি ছোট থেকে যখন বড় হয়েছি, সব সময় ভাবতাম বিশ্বের সেরা ক্রিকেটারদের বিপক্ষে খেলব, এখন সেটার সুযোগ পাচ্ছি। আমি তাই মুখিয়ে রয়েছি এই ম্যাচের জন্য। আমি যে সুযোগটা পেয়েছি, সেটা আমার কাছে উৎসাহের, এক্ষেত্রে প্রতিপক্ষ দল শক্তিশালী বলে ভয় পাচ্ছি না মোটেই। অবশ্যই তাদের সঙ্গে খেলব, আলাপ করব। তবে চেষ্টা করব জেতার।’
যুক্তরাষ্ট্র দলে অভিবাসী ক্রিকেটারদের ছড়াছড়ি। তবে জোন্সের জন্ম এবং বেড়ে ওঠা যুক্তরাষ্ট্রেই। দলটির একাধিক ক্রিকেটার একসময় ভারতের হয়ে বয়সভিত্তিক ক্রিকেট খেলেছেন। যেখানে আছেন সৌরভ নেত্রভালকর, মোনাঙ্ক প্যাটেল, হারমিত সিং, মিলিন্দ কুমার, নীতিশ কুমারের মতো ক্রিকেটাররা। আর এখন তারাই মুখোমুখি হবে ভারতের বিপক্ষে।
‘আমাদের দলে ভারতের অনেক ছেলে রয়েছে, যারা এবারের ভারতীয় দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে অতীতে খেলেছে, তাই তারাও বেশ উত্তেজিত এই ম্যাচে একে অপরের বিপক্ষে খেলার জন্য ’।
একটি জয় যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নিশ্চিত করবে সুপার এইটের টিকিট। শেষ ম্যাচের জন্য সেটি নিশ্চিতভাবেই তুলে রাখতে চাইবে না তারা। ভারতের প্রত্যাশা থাকবে, শিভাম দুবে ও বিরাট কোহলি যেন রানে ফিরে আসেন দ্রুত।