বিনোদন বাজার রিপোর্ট
দেশের প্রেক্ষাগৃহে ঈদ উৎসব প্রায় শেষ। এরমধ্যে ঢাকা থেকে দীপাঞ্চল ভোলায় গেছে ঈদের অন্যতম ছবি ‘ময়ূরাক্ষী’। একই সময়ে ‘তুফান’ গিয়েছে সীমানা ছাড়িয়ে ভারতসহ বিশ্বের ১৭টি দেশে। ঈদের বাকি ছবিগুলো এরমধ্যে শিরোনামহীন!
ঈদের একমাত্র ছবি হিসেবে ঢালিউডের বাজার এখনও সচল রেখেছে ‘তুফান’। যা সম্প্রতি বিদেশেও প্রবাহমান। গত সপ্তাহে ছবিটি বিশ্বের ১৫টি দেশের শতাধিক হলে মুক্তি পেয়েছে। দেশগুলো হলো, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, সুইডেন, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, স্পেন, পর্তুগাল, আবুধাবি, বাহরাইন, কাতার ও ওমান।
শুক্রবার (৫ জুলাই) এই বহরে যুক্ত হলো ভারতের নামও। যদিও ভারত না বলে পশ্চিম বাংলা বলাটাই উত্তম। এদিন পূর্ব বাংলা তথা বাংলাদেশের ছবিটি মুক্তি পেয়েছে পশ্চিমের ৪৭ প্রেক্ষাগৃহে। যদিও শাকিবিয়ানদের প্রত্যাশা ছিলো ভারতজুড়েই হিন্দিভাষায় ডাব করে ছবিটি মুক্তি দেবে এসভিএফ। কিন্তু বাস্তবতায় সেটি মেলেনি।
তবে তুমুল উন্মাদনা আর আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুক্রবার (৫ জুলাই) ‘তুফান’ মুক্তি পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। তার আগে ৪ জুলাই কলকাতা শহরে আয়োজন করা হয়েছে শাকিব-মিমি-রাফীদের নিয়ে বড়সড় সংবাদ সম্মেলন।
সেখানে শাকিব জানান, ইতোমধ্যে ৬-৭টি দেশে হাউজফুল যাচ্ছে ‘তুফান’ শো। ইংল্যান্ডে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানের ছবির তালিকায় সেরা চার-এ চলে এসেছে বাংলা সিনেমা। নায়কের কণ্ঠে, ‘এটাই প্রমাণ করে আমাদের বাংলা সিনেমা কতটা এগিয়ে যাচ্ছে।’
কৌশানী বলেন, ‘বাংলাদেশে কাজ করতে গিয়ে দেখেছি ওখানকার মানুষ শাকিবকে রজনীকান্তের মতো ভালোবাসেন। আমি শুনেছি ওখানে ‘তুফান’ ব্লকবাস্টার হয়ে গেছে। ছবি দেখে আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। আমার বিশ্বাস পশ্চিমবঙ্গেও ‘তুফান’ সফল হবে।’
যদিও প্রথম দিনের বক্সঅফিস কালেকশন থেকে অনুমান করা যাচ্ছে, ‘তুফান’র ঢাকাই তেজ পশ্চিমে খুব একটা বইবে না। যেমনটা বয় না পশ্চিমের ছবি পূর্ব বাংলাতেও।
আরও বলেন, ‘ওপার-এপার যে বাংলাই হোক, এই তুফান থামবে না। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বাংলা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি জানিয়ে দেবে যে হলিউড, বলিউড, তামিলের সাথে আমরাও টপ চার্টে আছি, পিছিয়ে নেই।’
সংবাদ সম্মেলন শেষে কলকাতার সাউথ সিটি মলে এক প্রিমিয়ার অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে হাজির হয়েছিলেন মধুমিতা সরকার, ইধিকা পাল, কৌশানী, বনি সেনগুপ্ত, অনিন্দ্য চ্যাটার্জি, দর্শনা বণিক, সৌরভসহ পশ্চিম বাংলার একঝাঁক তারকা শিল্পী।
প্রিমিয়ার শেষে অনিন্দ্য চ্যাটার্জি বলেন, ‘‘তুফান’ এই সময়ে দুই বাংলার সবচেয়ে সেরা কমার্শিয়াল সিনেমা। ছবিটি দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। এতদিন শুধু শাকিব খানের তারকাখ্যাতির গল্প শুনেছি। আজ তার সিনেমা দেখে ফ্যান হয়ে গেলাম।’’
ইধিকা পাল বলেন, ‘‘তুফান’ আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। বিশেষ করে শাকিবের যে প্রেজেন্টেশন আমি জাস্ট ভাবছিলাম কত পরিশ্রমই না তাকে করতে হয়েছে। সে নিজেকে উৎরে দিয়েছে। পুরো টিমকে অভিনন্দন। কলকাতার মানুষ ‘তুফান’কে বরণ করে নিক।’’
সিনেমাটির প্রশংসা করে ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বাংলায় বলা হয়েছে, ‘বাংলা ছবিতে যে ধরনের টেকনোলজির ব্যবহার করা হয়েছে, তা খুব একটা চোখে পড়ে না। ফলে টেকনিক্যাল দিক থেকে এটি যে বেশ উচ্চ মানের একটি বাংলা ছবি তা বলাই যায়।’
সংবাদমাধ্যমটি আরও লিখেছে, ‘আপনি যদি ‘বাহুবলী’ ও ‘অ্যানিমেল’ দেখার জন্য প্রেক্ষাগৃহে ভিড় করতে পারেন, তাহলে ‘তুফান’ও আপনাকে দেখতে হবে।’
ছবির ইতিবাচক দিক তুলে ধরে সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ‘একটি দৃশ্যের কথা উল্লেখ করতেই হয়। যেখানে ছবির এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র অন্য আরেকজনকে হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করছে। সেখানে যেভাবে পুরো দৃশ্যটি নির্মাণ করা হয়েছে, তা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। পাশাপাশি ছবির গান নিয়ে নতুন করে কিছুই বলার নেই।’
ভারতীয় দৈনিক ‘সংবাদ প্রতিদিনের’ অনলাইন সংস্করণে ছবিটি সম্পর্কে লেখা হয়েছে, ‘শাকিব তার স্টাইলে, শরীরী ভাষায় হয়ে উঠেছেন সমসময়ের অকৃত্রিম হিংসার প্রতীক। হলভর্তি দর্শক গুলি ছুটলে হাততালি দিচ্ছে, রক্তপাত হলে উল্লাসধ্বনি প্রকাশ করছে। দর্শকের এই পালসটাই ধরতে চেয়েছেন পরিচালক এবং তার যোগ্য সংগ দিয়েছেন শাকিব খান।’
এছাড়াও ইউটিউবে ছবিটির রিভিউ করেছেন ‘ফিল্ম কম্পানিয়ন লোকাল’-এর অরিত্র, ‘রূপমস রিভিউ’-এর রূপম, ‘আর্টিস্টিক সেভেনথ সেন্স’-এর সাগরনীল। তারা তিনজনই সিনেমাটির কারিগরি দিক, শাকিব খান এবং চঞ্চল চৌধুরীর প্রশংসা করেছেন।