বিনোদন বাজার ডেস্ক
‘বিশেষ’ সাধারণ সভার জন্য প্রস্তুত অভিনয়শিল্পী সংঘের সদস্যরা। গত চৌদ্দ দিনের ঘটনার পর্যবেক্ষণ বলে দিচ্ছে, আজ কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে অভিনয়শিল্পী সংঘে।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে পদত্যাগ করতে যাচ্ছে অভিনয়শিল্পী সংঘের নির্বাহী কমিটি। তবে সভার আলোচনার ওপরে অনেক সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে। সংস্কারপ্রত্যাশী শিল্পীরা চান, নতুন কমিটি। নির্বাহী কমিটি চান শান্তিপূর্ণ সমাধান। এবার দুই পক্ষের জয় পরাজয়ের অপেক্ষা।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের পক্ষে ছিলেন তারকাদের একটি অংশ। আর একটি অংশ ছিলেন বিপক্ষে। আরও একটি অংশ ছিলেন নীরব। শিল্পীদের সংগঠন অভিনয়শিল্পী সংঘের কার্যক্রম নানা কারণে ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। এসব কারণে অভিনয়শিল্পী সংঘ সংস্কার তথা বর্তমান কমিটির পদত্যাগের দাবিতে গত কদিন ধরে সংঘবদ্ধ হচ্ছিলেন অর্ধশতাধিক শিল্পী। তারই আনুষ্ঠানিক বহিঃপ্রকাশ ঘটে ছিল গত ১০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর রবীন্দ্র সরোবরে।
সংস্কারপ্রত্যাশী শিল্পীরা ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে শিল্পী সংঘের কমিটির সদস্যদের পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেয়। সেটা উপেক্ষা করে আজ বিকেল ৪টায় মহাখালীর এসকেএস কনভেনশন সেন্টারে বিশেষ সাধারণ সভা ডেকেছে অভিনয়শিল্পী সংঘ। যদিও সেখানে উপস্থিত থাকবেন কেবল সদস্যরাই। কিন্তু সভাকক্ষের বাইরে অবস্থান নেবেন বলে জানিয়েছেন সংঘের অসদস্য শিল্পীদের একাংশ। কেন?
সংস্কারপ্রত্যাশী ‘দৃশ্যমাধ্যমের শিল্পী সমাজ’-এর মুখপাত্র অভিনেতা সোহেল মন্ডল। তিনি মনে করেন সবাই মিলে একটা ভালো সিদ্ধান্তে পৌঁছাবে। সেটিই সবাই মেনে নেবেন। অভিনয়শিল্পীরা সংগঠন সংস্কার নিয়ে নানা মত তুলে ধরেছিলেন। তার প্রত্যাশা, সংগঠন সেগুলো মেনে নেবে।
গত ১০ সেপ্টেম্বর আজমেরী হক বাঁধন স্পষ্ট ভাষায় বলেছিলেন, ‘ স্বৈরাচারী সরকারের পতন হয়েছে বটে, কিন্তু তার দোসরদের আমরা অনুসরণ করতে পারি না। আমরা এই মিডিয়াকে যেভাবে দেখতে চাই, সেটা দেখাতে তারা ব্যর্থ হয়েছেন। সম্মানের সঙ্গে বলছি, আপনারা (কমিটির বর্তমান সদস্য) জায়গাটা (পদ) ছেড়ে দেন। আপনারা খুব একটা দুঃখ পাবেন না, মন খারাপ করার মতো কিছু ঘটবে না। বিশ্বাস করেন।’
ওই অনুষ্ঠানে নাজিয়া হক অর্ষা বলেছিলেন, ‘৫ আগস্টের পর নতুনভাবে আমাদের দেশের পথচলা শুরু হয়েছে। আমাদের সিনিয়র শিল্পীরা গত দুই মাসে যে সমস্ত কুকর্ম করেছেন, তার কটুকথা আমাদেরও হজম করতে হয়েছে। এখন দেশের সবখানে সংস্কার চলছে। আমরা মনে করি, আমাদের শিল্পীদের জন্য সেটা আগে জরুরি। আমাদের সংগঠনের কিছু শিল্পী-নেতাদের কারণে আজ আমরা জনগণের প্রশ্নের মুখে পড়েছি। সেজন্য আমরা শিল্পী সংঘের কিছু বিষয় নিয়ে নেতাদের সঙ্গে বসতে চেয়েছি। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে বসতে রাজী হয় নাই। শেষে আমি বলতে চাই, আপনারা যদি আমাদের সঙ্গে না বসেন, তবে এতদিন আপনারা যা করেছেন সেগুলোর উত্তর আপনাদের দিতেই হবে।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আসার পর থেকেই অভিনয়শিল্পী সংঘের নানা কার্যক্রমের বিরুদ্ধে সংস্কার দাবি করেছে অভিনয়শিল্পীদের একটি দল। তাদের দাবি প্রসঙ্গে নাসিম বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমাদের আলোচনার সুযোগ রয়েছে। তাই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে। পাশাপাশি আজ (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকালে আমরা সাধারণ সভার ডাক দিয়েছি। সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’
দুই পক্ষের অবস্থান দেখে ধারণা করা হচ্ছে, অন্তর্বর্তী একটি কমিটির হাতে ছেড়ে দেওয়া হবে অভিনয়শিল্পী সংঘকে। সেখানকার গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে পারেন আজমেরি হক বাঁধন, নাজিয়া হক অর্ষা, শরিফ সিরাজ, খায়রুল বাসার প্রমুখ। অন্তর্বর্তী এই কমিটি সংগঠনের পরবর্তী নির্বাচনের আগে নানা রকম পরিবর্তন, সংস্কারের চেষ্টাও করবেন। বর্তমান কমিটির একটি সূত্র জানিয়েছে, এই সংগঠনের অনেক সাফল্য রয়েছে। যাদের হাত ধরে সেসব সাফল্য অর্জিত হয়েছে, পরবর্তী নির্বাচনেও সাধারণ সদস্যশিল্পীরা ওই নেতৃত্বকেই বেছে নেবেন।