Wednesday, December 25, 2024
spot_img

লাইফ সাপোর্টে আছেন অভিনেত্রী ‘রিশতা লাবনী সীমানা’

বিনোদন বাজার রিপোর্ট

মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মডেল-অভিনেত্রী রিশতা লাবনী সীমানা। ১৩ দিন পেরিয়ে গেলেও তার জ্ঞান ফেরেনি। তাকে নিয়ে উদ্বিগ্ন তার সহকর্মী ও ভক্তরা। অনেকেই তার জন্য দোয়া চেয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন।

লাইফ সাপোর্টে থাকা মডেল ও অভিনেত্রী সীমানার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। রোববার সকালে কর্তব্যরত চিকিৎসক সীমানার পরিবারকে জানিয়েছেন তার এই অবস্থার কথা। সীমানার ছোট ভাই এজাজ বিন আলী খবরটি নিশ্চিত করেছেন।

এজাজ বিন আলী বলেন, ‘সকালে চিকিৎসকেরা আমাদের জানিয়েছেন, আপুর অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। ব্রেনের একটা সিটিস্ক্যান করতে বলেছেন। এই পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পেলেই তারা আমাদের পরবর্তী করণীয় কী, জানাবেন। আমরা আল্লাহর ওপর ভরসা করে আছি। অলৌকিক যদি কিছু ঘটে, তাহলে হয়তো আপু সুস্থ হয়ে উঠবেন। আব্বু-আম্মু খুবই ভেঙে পড়েছেন। ছোট্ট বাচ্চা দুইটা খুব কান্নাকাটি করছে।

১৩ দিন ধরে হাসপাতালের বিছানায় শয্যাশায়ী সীমানার কবে জ্ঞান ফিরবে, সে ব্যাপারে এখনই কিছু জানা যাচ্ছে না। একটি অস্ত্রোপচারও হয়েছে তার। এদিকে এতদিন ধরে মাকে এভাবে বিছানায় অচেতন অবস্থায় দেখাটা মেনে নিতে পারছে না ছেলে আকাইদ সাজ্জাদ শ্রেষ্ঠ। বারবার মায়ের কাছে ফিরতে চাইছে ছেলে। মা কেন চোখ খুলছে না। কেন কথা বলছে না, এসব প্রশ্ন আট বছর বয়সি ছেলে শ্রেষ্ঠর। মায়ের জন্য ক্ষণে ক্ষণে চিৎকার করে কাঁদছে ছেলে। এমন চিৎকারের কান্না পরিবারের কেউ সহ্য করতে পারছেন না।

সীমানার দুই সন্তান। বড় সন্তান শ্রেষ্ঠর বয়স আট, আর ছোট সন্তান স্বর্গ তিন বছর বয়সী। চিকিৎসকদের বরাতে সীমানার পরিবারের সদস্যদের ভাষ্য, অলৌকিক যদি কিছু ঘটে, তাহলে হয়তো একটা কিছু হবে। এই মুহূর্তে অবস্থাটা মোটেও ভালো কিছু নয়।

সীমানার পরিবার জানিয়েছে, ২১ মে রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন সীমানা। সেদিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে তাকে দ্রুত ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হলে জানতে পারেন, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে। পরদিন আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য সীমানাকে ধানমন্ডির আরেকটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে ঢাকার আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গত কয়েক দিন সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিলেন। ২৭ মে এই হাসপাতালে তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়। এদিকে গত বুধবার বিকাল থেকে সীমানার চিকিৎসা চলছে ঢাকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে।

সীমানার শারীরিক অবস্থা প্রতিনিয়ত অবনতি হয়েছে। শুরুর দিকে তাকে আইসিইউতে রাখা হলেও বুধবার থেকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। বুধবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আনার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে বলে জানান সীমানার ভাই এজাজ বিন আলী।

এর আগে, অভিনেত্রীর সাবেক স্বামী সংগীতশিল্পী পারভেজ জানিয়েছিলেন, শারীরিক কিছু সমস্যায় ভুগছিলেন সীমানা। গেল ২০ মে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে

এদিকে এক ফেসবুক পোস্টে দীপা খন্দকার লেখেন, ‘মানুষ জীবনে একটু আরাম, একটু মানসিক শান্তি, একটু ভালোবাসা, প্রিয় মানুষের কাছ থেকে একটু যত্ন চায়। বাবা-মায়ের আদরের সন্তান বড় হয়ে যখন নিজে জীবনযাপন করা শুরু করে তখন সবার ভাগ্য তো আর সহায় হয় না। ভালোবাসার মানুষ যখন অচেনা শত্রুর মতো আচরণ করে। মানসিকভাবে তিলে তিলে মেরে ফেলে, তখন সীমানার মতো এমন একটা ঘুম দিতে খুব ইচ্ছা করে, কিন্তু জীবন এতটাই নির্মম এই ঘুম দেওয়ার অধিকারও নাই।’

তিনি লেখেন, ‘অধিকার তুমি হারিয়েছ, যেদিন তুমি মা হয়েছ। এখনতো ঘুমালে আর চলবে না, উঠে দৌড়াতে হবে রেসের ঘোড়ার মতো। না হলে মরে গিয়েও মনে হবে দায়িত্ব তো শেষ করলাম না। যাবার অধিকার কে দিল? জেগে ওঠো ও লড়াই কর, প্রিয়।’

প্রসঙ্গত, সীমানা ২০০৬ সালে লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে কাজ শুরু করেন। ‘দারুচিনি দ্বীপ’ সিনেমায় অভিনয় করে প্রশংসিত হন তিনি। পরে নাটকেও অভিনয় শুরু করেন। কিন্তু হঠাৎ ২০১৬ সাল থেকে অভিনয়ে বিরতি। পরে জানা যায়, মা হওয়ার জন্যই এই বিরতি। দুবার মা হওয়ার কারণে তার এই দীর্ঘ বিরতি। বিরতি ভেঙে গত বছর আবার নাটকে অভিনয় শুরু করেন।

- Advertisment -spot_img

সবচেয়ে জনপ্রিয়